ডায়াবেটিস নিয়ে ডাঃ ফাহিমের সেমিনার
বাফেলোবাংলা রিপোর্ট: ডায়াবেটিস নিয়ে সচেতনা বৃদ্ধির জন্য সেমিনারে আয়োজন করেছে বাফেলো দেশী। সেমিনারে মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন করেন কমিউনিটি সুপরিচিত ব্যক্তি গ্রাইডার ফ্যামেলি হেলথ সেন্টারের ডাক্তার ফাহিম তাজওয়ার। গত ২২ নভেম্বর মিনিসোটা এভিনিউ’র বাফেলো মুসলিম সেন্টারের সহযোগীতায় এ বিশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারের শুরুতে কোরান তেলওয়াত করেন মাওলানা মোহাম্মাদ অহিদুল ইসলাম। পরে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাফেলো মুসলিম সেন্টারের সভাপতি হাবিবুর রহমান।
সেমিনারে ডাঃ ফাহিম জানান, এক গবেষণার দেখা গেছে বাংলাদেশীদের মধ্যে ১৪ শতাংশ মানুষের ডায়াবেটিস রয়েছে।আমেরিকায় প্রতি ৫ জন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের মধ্যে ১ জনের ডায়াবেটিস রয়েছে। বাংলাদেশী আমেরিকানদের মধ্যেও এ রোগের ঝুকি বেশী।তিনি বলেন, শরীরে যখন ইনসুলিন তৈরি হতে না পারে অথবা এটা ঠিক মতো কাজ না করে তখনই ডায়াবেটিস হয়। এর ফলে রক্তের মধ্যে চিনি জমা হতে শুরু করে, যা মাংশ পেশীতে যেতে পারেনা।
ডায়াবেটিসের কারণে মানুষের হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হতে পারে। এছাড়াও এ কারণে মানুষ কিডনি নষ্ট বা অন্ধ হয়ে যেতে পারে। তবে জীবন যাপনের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম নীতি মেনে চললে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। বিশেষ করে খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত শরীর চর্চার মাধ্যমে সুস্থ থাকা যায়।ডায়াবেটিস হলে প্রাথমিক কয়েকটি উপসর্গ লক্ষ্য করা যায়, যেমন- ক্লান্ত বোধ করা, ঘন ঘন প্র¯্রাব হওয়া, খুব তৃষ্ণা পাওয়া, ওজন কমে যাওয়া, শরীরে কোথাও কেটে গেলে তা শুকাতে দেরি হওয়া ইত্যাদি।
তিনি বলেন, ডায়াবেটিস হলে খাবার গ্রহণে সচেতন হতে হবে। প্রথম চিনি দিয়ে তৈরি করা, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং কোমল পানীয় বাদ দিতে হবে। বেশি পরিমান ভাত বা রুটি খাওয়া কমাতে হবে। বেশি করে শাক সব্জি, ফল এবং লাল আটার রুটি খেতে হবে।
ট্রফিকানা জুসের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশীদের কাছে এটা অনেক প্রিয়।এটার গায়ে শতভাগ জুস লেখা থাকলেও একগ্লাস জুসে আড়াইটি মতো ডোনাটের সম পরিমান চিনি রয়েছে। মুলত প্রক্রিয়াজাত করার কারণে জুসে চিনির পরিমান অনেক বেশি হয়ে থাকে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে মুলত তিনি সরাসরি ফল খাবার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, আপনার তৃষ্ণা লাগলে আল্লাহর দেয়া বিশুদ্ধ পানি ছাড়া অন্য কোন পানীয় খাবার দরকার নেই। কেননা একটি মাউন্টেন ডিউ’র মধ্যে ২০ চামুচ এবং একটা বিটামিন ওয়াটারের মধ্যে ৯ চামুচ চিনি রয়েছে।
হাদিসের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, হযরত মুহাম্মাদ রাসূল (সাঃ) সুন্নাত অনুযায়ী খাদ্যাভ্যাস করলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব।
তিনি বলেন, অনেকেই প্রশ্ন করেন কোন ফলটা বেশি খাবো, যে ফল মুখে বেশি মিষ্টি লাগবে সেটা কম পরিমান খেতে হবে, অন্য ফলগুলো চাহিদা মতো খাওয়া যাবে।
তিনি উল্লেখ করেন, আমার পরামর্শগুলো প্রাথমিকভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন বা প্রতিরোধের জন্য। তবে কারো বেশি মাত্রাই ডায়াবেটিস থাকলে নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শে চলতে হবে।
আগত মুসল্লিদের সেমিনার শেষে ডায়াবেটিস ও সিগারেট ও ইলেক্ট্রিক সিগারেট বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ইলেক্ট্রিক সিগারেটকে রেগুলার সিগারেটের চেয়ে বেশী ভয়াবহ হিসেবে উল্লেখ করেন।