সন্তানদের আসল ঠিকানার জন্য গাইড করছেন কি?
জাকিয়া করিম: একজন অভিভাবক হিসেবে কি আপনি সত্যিই আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত ? ঠিক বুঝতে পারলেন না তো -আমরা সন্তানের ভবিষ্যৎ বলতে শুধুই চিন্তা করি তার একাডেমিক উন্নতি নিয়ে। সেকি একজন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সাইন্সটিস্ট, ব্যবসায়ী বা ভালো হাই পেমেন্টের জব করবে কিনা, আমাদের সেটা নিয়েই মাথা ব্যথা বেশি। একটা ভাল প্রফেশনের জন্য সন্তানদের তৈরী করা গুরূত¦পূর্ণ। আমরা যারা ইসলাম ধর্মাবলম্বী তাদের সন্তানদের এই দুনিয়ার জন্য তাদের তৈরী নিয়ে মাথা ঘামালে চলবে না। আমাদের সন্তানদের আখেরাতের, আমাদের ফাইনাল গন্তব্যর জন্যও প্রস্তুত করতে হবে। আমাদের জীবনটা অনেক ছোট, তাই সন্তানদের অল্প বয়স থেকে নামাযের গুরুত্ব বোঝাতে হবে।
আমরা কি পারছি আমাদের সন্তানদের সঠিক ভাবে গাইড করতে? এই সোশাল মিডিয়ার যুগে আমাদের সন্তানরা অনেক বেশি ডিপ্রেশণে ভোগার ঝুঁকি প্রবণ। বর্তমান যুগটা হচ্ছে কমার্শিয়াল যুগ। কমার্শিয়াল যুগে শুধু মানুষের চাহিদা কিভাবে বাড়াবে, কিভাবে মানুষকে অতৃপ্তিতে ভোগাবে এটাই ব্যবসায়ীদের মূল লক্ষ্য । আমরা সবাই ব্রেইন ওয়াশ করা কমার্শিয়ালের কাছে মোটামোটি বিকৃত । ডিপ্রেশণ থেকে দূরে রাখতে আমাদের সন্তানদের আমাদের দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে উৎসাহ দিতে হবে। বলতে হবে সন্তানদের মন খারাপ দূর করতে পারে একমাত্র আল্লাহ।
আমাদের সবার জীবনে কম বেশি কিছু লক্ষ থাকে। একজন ডাক্তার জীবনের অনেক সময় পার করে ডাক্তারী পাশ করে ডাক্তার হয়ে বের হতে। এখন আমরা অনেক সময় দেখি সে লক্ষ্যে পৌছানোর আগে অনেকেই পরপারে টিকেট পেয়ে যায় ; তাই বলেকি তার জীবনটা বৃথা গেল? আপনি যদি শুধুই পার্থিব জীবন নিয়ে চিন্তিত তাহলে ভাববেন যে , হ্যা তার জীবনটা বৃথা গেল।
একজন মুসলমান হিসেবে আমরা বিশ্বাস করি আমাদের এই পৃথিবী ক্ষণস্থায়ী এবং এই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে আমাদের একদিন চলে যেতে হবে। যদি পৃথিবীটা ক্ষণস্থায়ী হয়, তাহলে কি আমরা আমাদের আসল ঠিকানার জন্য প্রস্তুত হচ্ছি ? প্রস্তুত করছি আমাদের সন্তানদের ? মনে রাখবেন আপনার সন্তানটি যদি ডাক্তার হয়, সেটা এই দুনিয়ার জন্য। পরপারে আমরা কেউই কোন প্রফেশনের লেবেল লাগিয়ে উঠবো না। একজন মুসলমানের ঈমান আনার পর ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে এরপরটি হল নামাজ। নামাজই জান্নাতের চাবি কাঠি। আমরা সত্যি যদি সন্তানের ভাল সুন্দর ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে শিখাতে হবে। আমরা এবং আমাদের সন্তানের যেন শুধু দুনিয়ার লক্ষ্যে পৌছানো নিয়ে ব্যস্ত না থাকি। আর যদি তা হয়ে থাকে তাহলে আমরা সেই লক্ষ্যে পৌছানোর আগে যদি পরপারের ডাক পেয়ে যাই। তাহলে সত্যিই আমাদের জীবন হবে মিথ্যা।